চা পানের আদর্শ সময়…
সকালে ঘুম থেকে উঠে। সারাদিনে কয়েকবার কিংবা রাতে ঘুমানোর আগেও অনেকে পান করেন চা। জনপ্রিয় এই পানীয়টি পান করার আদর্শ কোনো সময় কোনটি?
চা পান খারাপ নয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ চা পান মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চায়ের মধ্যে এমন অনেক উপকরণ রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
সকালে
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা পান করা জনপ্রিয় একটি অভ্যাস। ইংরেজিতে বলি বেড টি। কিন্তু ঘুম থেকে খালি পেটে উঠে চা পান করলে উপকারের থেকে ক্ষতি হওয়ার আশংকাই বেশি। চা একটি অম্লজাতীয় তরল; কারণ, এতে আছে ট্যানিন এবং ক্যাফেইন নামক পদার্থ, যা পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন ত্বরান্বিত করে। তাই প্রাতঃকালে খালি পেটে চা পান করলে শরীরের অম্ল অথবা ক্ষারের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
এ ছাড়া চিনিসহ চা খেলে তা মুখগহ্বরের জীবাণুর সঙ্গে মিশে অম্ল তৈরি করে, যা দাঁতের জন্য ক্ষতিকারক। বিশেষ করে যাঁদের অ্যাসিডিটি আছে, তাঁদের সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। উপরন্তু চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাফেইন–জাতীয় পদার্থ অনেক সময় বুক জালাপোড়ার কারণও হয়ে থাকে। যাঁদের দ্রুত হৃৎস্পন্দনজনিত জটিলতা আছে, তাঁদের চা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়; কারণ, চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাফেইন হৃৎস্পন্দন ত্বরান্বিত করে। সে জন্য, সকালে চা পান করার আদর্শ সময় নাশতার ১৫ বা ২০ মিনিট পর।
রাতে
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে, নিদ্রার আগে চা পান ঘুমে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে ক্যাফেইনের তারতম্য নিদ্রাজনিত ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কারণ, ক্যাফেইন আমাদের জাগ্রত রাখতে সাহায্য করে। লাল চা বা ব্ল্যাক টিতে ক্যাফেইন থাকে ৪০ মিলিগ্রামের মতো। গ্রিন টি বা সবুজ চায়ের মধ্যে থাকে প্রায় ৩৫ মিলিগ্রাম। আবার হারবাল চা বা ভেষজ চায়ের মধ্যে ক্যাফেইন নেই বললে চলে। ক্যাফেইনমুক্ত চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে, ক্যামোমাইল চা, ভেষজ চা ঘুম ও শরীরকে শিথিল বা রিলাক্স করার জন্য উপকারী।
দিনের অন্য সময়
দিনের অন্য সময় চা পান করলে ক্ষতি নেই। তবে খালি পেটে চা পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত। খাবার এক থেকে দুই ঘণ্টা পর চা পান করা ভালো।