নারকেলের মালা থেকে পণ্য তৈরি
ব্যবসার পথ খোলা আছে, যা অনেকে হয়তো জানেন না। একটু বুদ্ধি খাটালেই বিভিন্ন ব্যবসার মাধ্যমে লাভের মুখ দেখা সম্ভব। তেমনই একটি ব্যবসা হচ্ছে নারকেলের মালা থেকে পণ্য তৈরির ব্যবসা। বিশেষ করে বোতাম তৈরিতে বেশ উপযোগী পণ্যটি। তাছাড়া নারীদের বিভিন্ন ডিজাইনের অলংকার তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়।
নারকেলের মালা সাধারণত পরিত্যক্ত হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ পরিত্যক্ত মালাকে দামি পণ্যে পরিণত করা সম্ভব। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাড়িতেই এ ব্যবসা করা যায়। এ ব্যবসায় বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে না। সামান্য পুঁজি হাতে থাকলেই শুরু করা যায়। এসব কাজে নারীরাই বেশি নিযুক্ত হতে পারে। গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে এ কাজ করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে নিতে পারে তারা। মালা থেকে পণ্য তৈরির পর মালার অতিরিক্ত যে অংশ থাকে, তা ঢাকার বিভিন্ন মশার কয়েল তৈরির কারখানায় বিক্রি করেও উপার্জন করা যায়।
যা প্রয়োজন
প্রধান উপকরণ হচ্ছে নারকেলের মালা। এরপর ড্রিল মেশিন ও মসৃণ করার মেশিন কিনতে হবে। নারকেলের তেল উৎপাদনে প্রচুর নারকেল ব্যবহার করা হয়। এখানকার পরিত্যক্ত মালাগুলো কাজে লাগানো যেতে পারে। তাছাড়া মাগুরাসহ বাগেরহাট সদর ও খুলনার রূপসা এলাকায় এগুলো কম দামে বিক্রি করা হয়। প্রতি হাজার মালা এক থেকে দুই হাজার টাকা দরে কিনে আনা যায়।
প্রস্তুত প্রণালি
বাড়িতেই এর কারখানা খুলতে পারেন অথবা পোশাক কারখানা রয়েছে এমন জায়গায় কারখানা স্থাপন করতে পারেন। মালা দিয়ে নানারকম পণ্য বানানো গেলেও কাজটি বেশ সহজ। প্রথমে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে বোতামের আকার অনুযায়ী নারকেলের মালা থেকে বৃত্ত কেটে পৃথক করা হয়। তারপর বোতামের গায়ে অন্য একটি ড্রিল মেশিনে সুতা ভরার জন্য সূক্ষ্ম ছিদ্র করা হয়। বৃত্তগুলো পাটের বস্তা দিয়ে ঘষে মসৃণ করা হয়। প্রতি এক হাজার নারকেলের মালা থেকে ছোট-বড় মিলে ৩০ থেকে ৫০ হাজার বোতাম তৈরি করা সম্ভব। বোতাম তৈরির পর যে অতিরিক্ত অংশ থাকে তা থেকে আকর্ষণীয় কানের দুল ও মালা তৈরি করে বিক্রি করা যায়।
প্রতিটি প্যাকেটে এক হাজার করে বোতাম ভরা হয়। বোতাম বিক্রি হয় ছোট-বড় প্যাকেট হিসেবে। এক হাজার বোতামের এক প্যাকেট বিক্রি হয় প্রায় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। এক হাজার বোতাম উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। একটি মেশিনে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার বোতাম তৈরি করা সম্ভব। তবে ইতালির তৈরি একই ধরনের লেজার মেশিনে এক লাখ বোতাম উৎপাদন করা যায়। কিন্তু এ মেশিন কিনতে অনেক পুঁজির প্রয়োজন। তাই কেনা সম্ভব না হলে প্রথম দিকে সাধারণ মেশিন দিয়ে পণ্য তৈরি করে সেই লাভের টাকা দিয়ে পরবর্তী সময়ে কিনে নেওয়া যেতে পারে।
বাজারজাতকরণ
পোশাক তৈরির কারখানা, গার্মেন্ট ও বায়িং হাউজ এর প্রধান ক্রেতা। অলংকারগুলোর জন্য বিভিন্ন বিপণিতে ক্রেতা পাওয়া যাবে।