পাটের ব্যাগে সফল ব্যবসা
বর্তমানে দেশ ও বিশ্ববাজারে পাটের চাহিদা রয়েছে। পাটজাত বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, কারণ দূষণ রোধ করে প্রকৃতি ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় বিশ্ববাসী এখন পাটজাত পণ্যের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
অনেক শহরে তাই পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে পাটের ব্যাগের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বেকার মানুষরা বাণিজ্যিকভাবে এ পণ্য উৎপাদন করে ব্যবসায় সফল হতে পারেন।
এছাড়া নারীদের পাটের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের ব্যাগের প্রতি বেশ ঝোঁক রয়েছে। তাই অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে আপনি পাটের ব্যাগ তৈরি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে এ ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।
প্রয়োজন
একটি পাটের ব্যাগ তৈরির ইউনিট চালু করতে প্রয়োজন কয়েকটি সেলাই মেশিন, দুটি হেভি ইউনিটের মেশিন, সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানা স্টিকার ও রং, কাঁচি, ফিতা, সুই-সুতা ও ভালো মানের পাট অথবা পাটের তৈরি চট।
যেভাবে শুরু করবেন
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কিংবা পাটশিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এ ব্যবসার জন্য ভালো ঋণ পেতে পারেন। এ ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে পাটের বাজার সম্পর্কে, কতটুকু কিনতে হবে, পাইকারি বা খুচরায় কত দামে বিক্রি করলে লাভবান হওয়া যাবে প্রভৃতি বিষয়ে ধারণা নিয়ে শুরু করতে হবে।
পদ্ধতি
এ ব্যাগ আপনি পাট অথবা পাটের তৈরি মসৃণ চট দিয়েও তৈরি করতে পারেন। তবে চট দিয়েই আপনার কাজ সহজ হবে। কারণ পাট দিয়ে সরাসরি ব্যাগ তৈরি করা সম্ভব নয়। পাটকে মেশিনের মাধ্যমে বুনে নিয়ে তারপর তৈরি করতে হবে। তাই চট ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ব্যাগের বেল্ট তৈরির জন্য আলাদা পাট লাগবে। পাট দিয়ে ডিজাইন করে ঘাড়ের বেল্ট বানিয়ে নিতে হবে। ব্যাগ তৈরির জন্য পাটের চট মেপে দাগ দিয়ে নিতে হবে। ব্যাগের সাইজ অনুযায়ী মেপে নিতে হবে। এরপর কাঁচি দিয়ে মাপমতো কাটতে হবে। যেভাবে ব্যাগের ডিজাইন করতে চান, ঠিক সেভাবে মেপে নিয়ে কাটবেন। এখন ব্যাগের আকার তৈরি করে নিয়ন্ত্রণের জন্য চারদিকে হাতের সাহায্যে বড় ফোঁড় দিতে হবে। এবার পছন্দমতো রঙিন সুতা দিয়ে মেশিনে ডিজাইন করে সেলাই করে নিন। ব্যাগের ওপর নজরকাড়া ব্লক বা ফেব্রিকসের নকশাও করতে পারেন। এতে ব্যাগটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
প্রশিক্ষণ
পাটের ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ বিসিক থেকে নিতে পারেন। ইউটিউবে পাটের পণ্য তৈরির অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। এখান থেকেও ব্যাগ তৈরি শিখে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া পাটের পণ্য তৈরির ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাছ থেকেও প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে।
বাজারজাতকরণ
পাটের তৈরি এ ব্যাগের চাহিদা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে দেশের বাজারে এটি বেশ সাড়া ফেলেছে। এ ব্যাগ তৈরি করে আড়ং, স্বপ্ন, আগোরা প্রভৃতি সুপারশপে বিক্রি করা যায়। এসব শপে এ ব্যাগগুলোর ক্রেতা রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন মেলা বা অনুষ্ঠানে এ ব্যাগগুলো বিক্রি করা যেতে পারে। প্রথম দিকে বিনা মূল্যে বা স্বল্পমূল্যে নমুনা পণ্য বিতরণ, কুপন, নিয়মিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্য অফার, একটি কিনলে একটি ফ্রি প্রভৃতি কৌশলের মাধ্যমে ব্যবসায়ে বিক্রির প্রসার বাড়ানো যেতে পারে।
সতর্কতা
দেশীয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটের ব্যাগ তৈরি করতে হবে। অনেক সময় মানসম্মত পণ্য তৈরি না হলে বা দামের কারণে বাজারজাতকরণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।