বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক পুরস্কারে কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক
শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রাখাসহ বিভিন্ন অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক দেবে সরকার। প্রতি ২ বছর পর একজন ব্যক্তিকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
পদক পাওয়া ব্যক্তি ১ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা পাবেন। এছাড়া তিনি ৫০ গ্রাম ওজনের (চার ভরির বেশি) ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ পদক পাবেন।
এ লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। এর ৫০ বছর পূর্তি আমরা গত বছর উদযাপন করেছি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শান্তি পুরস্কার তিনি প্রবর্তন করতে চান। সে পরিপ্র্রেক্ষিতে একটি নীতিমালা আমরা উপস্থাপন করেছি। মন্ত্রিসভা সেটি অনুমোদন করেছে।
এই নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের যেকোনও প্রান্ত বা বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার দেওয়া যাবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন- পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
পুরস্কারটি প্রতি দুই বছরে একবার দেওয়া হবে জানিয়ে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে প্রস্তাব নেওয়া যাবে। কারা কারা প্রস্তাব করতে পারবে নীতিমালায় সেটারও একটা বর্ণনা দেওয়া আছে।
তিনি জানান, একটি দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান বা সেই দেশের সংসদ সদস্যরা প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। নোবেল বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি যত দূতাবাস রয়েছে সেই দূতাবাসের প্রধানরা বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন বা দূতাবাসের প্রধানরাও প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। জাতিসংঘের কোনও সংস্থা প্রধানও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
তবে কোনও ব্যক্তি নিজে পুরস্কারের জন্য দাবি জানাতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী একটি জুরিবোর্ড গঠন করা হবে। জুরিবোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। নিরপেক্ষ ও খ্যাতিসম্পন্ন লোকদের দ্বারাই জুরিবোর্ড গঠিত হবে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।
অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছর (২০২৫) প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার দেওয়া হবে। মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নীতিমালা দিয়ে কাজটি যাতে শুরু করা হয়, এটিকে যাতে পরবর্তীকালে আইনের রূপান্তর করা হয়। আইনের মধ্যে একটি তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে। যে তহবিলে সরকার বা বাইরের লোক যে কেউ সেখানে অনুদান দিতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে আমরা তহবিল থেকেই সেই ব্যয়ভার নির্বাহ করতে পারব। সে পর্যন্ত সরকারই এই ব্যয়ভার বহন করবে।